আমাদের বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র।
আমাদের বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে এই রাষ্ট্রকে আমরা বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নিতে পেরেছি।
স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে কয়েকবার কিন্তু মানুষের ভাগ্যে আশানুরূপ পরিবর্তন কেনো ঘটেনি?
কোথায় আমাদের ব্যর্থতা?
কোথায় আমাদের ব্যর্থতা? এটা একটি কঠিন প্রশ্ন। উত্তর এদেশের বুদ্ধিজীবী মহলের অবশ্যই জানা আছে।
বুদ্ধিজীবীদের জানা আছে, রাষ্ট্রকে কিভাবে গড়ে তোলা দরকার। কিন্তু বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
স্বাধীনতা লাভের পর, হত্যা কু এবং ষড়যন্ত্র অক্টোপাসের মতো আমাদের ঘিরে ধরেছে।
যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে, সরকার প্রধানদের এবং মুষ্টিমেয় নীতিবান নেতার চক্ষু ছাপিয়ে একশ্রেণির অসাধু রাজনৈতিক নেতা ও আমলা মিলে লুটেপুটে খাবার চেষ্টা করেছে।
ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, কিন্তু চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি।
সম্প্রতি ঘটে গেলো, ২০২৪ সালের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন। স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটে গেলো।
বাঙালী জাতির ইতিহাসে লেখা রইলো আর একটি ঐতিহাসিক দিবস ৫ আগস্ট।
নোবেল বিজয়ী ডঃ ইউনুস মহোদয়কে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করে ছাত্রদের প্রতিনিধি সহ যোগ্য কিছু উপদেষ্টা বসলেন, বাংলাদেশের মসনদে।
রাষ্ট্র গঠন এবং সংস্কারের আন্তরিক সদিচ্ছা, সততা এমনকি দক্ষতা এবং যোগ্যতার কোনো অভাব নেই, এই উপদেষ্টাদের মধ্যে।
তথাপিও কোথায় যেনো গলদ রয়েছে, দেশ এবং দেশের বাইরে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নড়ছেই।
রাষ্ট্র সংস্কার করাটা আমাদের একান্ত জরুরি। কিন্তু কিভাবে এবং কোনপথে তাহা সম্ভব?
আমরা সকলেই গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে চিৎকার করি, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা সকলের আগে প্রয়োজন। প্রতিটি দলের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য নেতা নির্বাচন করা দরকার।
বৃহৎ এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলোতে, টাকা পেশীশক্তি এবং ক্ষমতার দাপটে নেতা নির্বাচিত হয়। যোগ্যরা পিছনে পড়ে থাকে এবং অবহেলিত রয়ে যাচ্ছে।
ফলে যা ঘটবার তাই ঘটছে। জাতি সঠিক এবং যোগ্য নেতাকে পাচ্ছেনা।
এছাড়াও রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানে ঘুষ এবং দূর্ণীতির মাধ্যমে ঢুকে পড়ছে অযোগ্য এবং দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।
এই ঘুষ দূর্ণীতি থেকে মুক্তি পাওয়াটাই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ এবং যেভাবেই হোক দূর্ণীতি বন্ধ করতে হবে, সেইসাথে ঘুষের অভিশাপ থেকে আমাদের বের হতে হবে।
সেক্ষেত্রে সিস্টেম পরিবর্তন যেমন একান্ত আবশ্যক অন্যদিকে ঘুষখোর চিহ্নিত করে তাদের বিদায় করাটাও জরুরি।
সেজন্য প্রয়োজন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা, কর্মী, বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার সৎ এবং যোগ্যদের সহযোগিতা।
আমাদের উচিৎ ছাত্র জনতার আন্দোলনকে বুকে ধারণ করে নতুন পথে এগিয়ে যাওয়া।
বৃহৎ এবং ছোটো রাজনৈতিক দলের মধ্যে যথেষ্ট সংখ্যক নীতিবান এবং যোগ্য নেতা আছে, তাদেরকে সামনের সারিতে আনতে হবে।
সৎ এবং যোগ্য অফিসার ও কর্মচারীদের যোগ্যস্থানে বসিয়ে দিতে হবে।
সৎ এবং যোগ্য তরুণদের দেশের বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োগ দিতে হবে।
সর্বপরি আমাদের মিলেমিশে রাতদিন কঠোর পরিশ্রম করে দেশের জন্যে কাজ করতে হবে।
হিংসা বিদ্বেষ পরিহার করতে হবে। মারামারি গন্ডগোল দখলদারী বন্ধ করতে হবে।
দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে যদিও একটু সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে সেজন্য অবশ্যই আমাদের দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।
কথায় আছে রোম শহর একদিনে সৃষ্টি হয়নি।
একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আনতে হবে। একটি নির্বাচনই শেষ কথা নয়, নির্বাচন কমিশনকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাহাতে অদূর ভবিষ্যতের সকল নির্বাচন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়।
তাহলেই আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশে ফিরে পাবো, যেখানে মারামারি গন্ডগোল চাঁদাবাজি থাকবেনা।
জাতি দলমত নির্বিশেষে আমরা একটি সভ্য দেশের সভ্য জাতি হিসাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত পর্যন্ত পরিচিত হতে পারবো।
আমাদের কোনো অভাব থাকবেনা, দুঃখ থাকবেনা, বৈষম্য থাকবেনা, আমরা শান্তিপ্রিয় এবং সভ্যতার বাংলাদেশ দেখতে পাবো।
আসুন সকলে মিলেমিশে কাজ করি, দেশের জন্যে কাজ করি, একটি স্বাধীন সোনার বাংলা গড়ে তুলি।
কি পেলাম সেটা বড়ো কথা নয়, এই দেশ জাতি এবং মাটি ও মানুষের জন্যে আমি আপনি কি করলাম, কি অবদান রাখলাম সেটাই সবচেয়ে বড়ো এবং দামী কথা।
আরও পড়ুন
কুদরত রাহমান এর কবিতা / ধ্বংস নয়
See more and read more
No Comments