কেনো মারামারি হানাহানি হত্যা এবং যুদ্ধ

Story, কবিতা ( Poetry) By Nov 19, 2024 No Comments
আমরা মানুষ জাতি। ধর্মীয় পরিভাষায় আশারাফুল মাকলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব।

সৃষ্টির সেরা জীব হয়েও আমরা কেনো দিনদিন পশু আচরণ কেও হার মানাচ্ছি?

বাঘ সিংহ হিংস্র প্রাণী। বাঘ সিংহের মতো হিংস্র প্রাণীগুলো ক্ষুধা নিবারনের জন্য অন্য পশুর উপর আক্রমণ করে, যেমন গরু ছাগল হরিণ ভেড়া মহিষ ইত্যাদি।

কখনও তারা নিজেরা নিজেদের হত্যা করেনা। সর্প ব্যাঙ ভক্ষণ করে। কিন্তু বিষধর সাপ কখনও অপর বিষধর সাপকে হত্যা করেনা।

পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে মানুষ বুদ্ধিমান জাতি, সভ্য জাতি এবং মানুষ সকল প্রাণীর উপর তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।

মানুষ বাঘ সিংহ বনমানুষকে পাকড়াও করে খাঁচায় বন্দী করে রাখতে পারে। বিষধর সাপকে ধরে তার বিষদাঁত ভাঙতে পারে।

মানুষের কতো অপরিসীম বুদ্ধি এবং কলা কৌশল ও ক্ষমতা!

মানুষ কি পারেনা কলা কৌশল এবং বুদ্ধিমত্তা দিয়ে খারাপ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে?

মানুষ চেষ্টা করলে অবশ্যই খারাপ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে, মানুষের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে।

জ্ঞানী গুনী মনিষী গণ বিভিন্ন সময়ে বারবার একই কথা বলেছেন এবং প্রমাণ করে গেছেন ” জ্ঞানই শক্তি ” Knowledge is power.

কিন্তু জ্ঞানের সেই শক্তি আধুনিক সভ্যতার যুগে আমরা কোন পথে নিয়ে যাচ্ছি?

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে পাওয়া যায়, হিংস্র প্রাণী আক্রমণ থেকে জীবন রক্ষা করার জন্য মানুষ অস্ত্র আবিষ্কার করতে থাকে।

প্রস্তর যুগে আদিম যুগে পাথরের তৈরি অস্ত্র দ্বারা মানুষ আত্মরক্ষা অস্তিত্ব রক্ষা করতো।

পৃথিবীর বয়স যত বৃদ্ধি পেয়েছে, মানুষ বিজ্ঞান চর্চায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে। বর্তমান সময় মানেই বিজ্ঞানের যুগ।

বিজ্ঞানের এই যুগে মানুষের আবিষ্কার হোক মানুষের গবেষণা হোক মানুষের কল্যাণে।

সমগ্র পৃথিবী জুড়ে বর্তমানে ঘটছে অস্ত্র বানানো প্রতিযোগিতা। এই অস্ত্র মানুষ হত্যা ধ্বংস আধিপত্য বিস্তারের জন্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।

কিন্তু এটা কি ঠিক? মানুষ হয়ে মানুষ কেনো মানুষকে হত্যা করতে প্রতিযোগিতা করতে ব্যস্ত?

আমরা কি পারিনা, আমাদের বুদ্ধিমত্তা এবং মেধার বিকাশ ঘটিয়ে, সভ্যতার নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে?

বিজ্ঞান ও দার্শনিক গণের গবেষণা হোক মানব সভ্যতার উন্নতির জন্য।

জন্মগত ভাবে মানুষ কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করে। মানুষ নিজে বাঁচতে চায় এবং অপরকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

মানুষ যত বেশী উন্নত প্রশিক্ষণ পাবে এবং বেশী করে শিক্ষালাভ করবে, ততই সম্পদে পরিণত হবে।

আমাদের উচিত শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে মানবসম্পদ বৃদ্ধি করা। তাহলে মানুষ আরও উন্নত জীবন লাভ করতে পারবে।

মানুষ কেনো মানুষের শক্র হবে? জগৎ জুড়ে আমাদের একটা পরিচয়, আমরা মানব জাতি।

জাতি দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আময়াদের একটা পরিচয় অগ্রগণ্য হওয়া উচিৎ, আমরা মানুষ।

হ্যাঁ, কিছু খারাপ মানুষ, অপরাধী বা ক্রিমিনাল এই জগতে আছে। তাদের শায়েস্তা করা উচিত, অন্যথায় তারা সভ্যতার বিঘ্ন ঘটায়।

মানুষ যদি হিংস্র বাঘ সিংহ বনমানুষ ভল্লুককে খাঁচায় বন্দী করতে পারে, চিড়িয়াখানা বানাতে পারে, তাহলে অপরাধী বা ক্রিমিনালদের খাঁচায় রাখা যেতে পারে।

তাইবলে, হত্যা নয়। মানুষ হত্যা মহাপাপ।

প্রতিযোগিতা হোক সভ্যতার জন্য, ধ্বংসের জন্য নয়।

কি কি বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা উচিৎ? জ্ঞানার্জন, অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন, জীবন চলার মান উন্নয়ন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিলো এবং থাকবে।

কে কতো বেশী জ্ঞানী, কে কতবড় সাধক, কে কতো বড়ো দার্শনিক, এটার প্রতিযোগিতা থাকা মন্দ নয়। কিন্তু সকলের সকল কর্ম এবং গবেষণা হতে হবে মানুষের কল্যাণের জন্যে।

আমরা ধ্বংসাত্মক কর্মের জন্য, যে অস্র নির্মাণ করে সময় ক্ষেপণ করছি, সেটা মানব জাতির জন্য অকল্যাণকর। বিশ্বের জন্য ভয়াবহ হুমকির দিকে হাঁটছি আমরা।

এই মুল্যবান সময় এবং অর্থ যদি অন্যখাতে অর্থাৎ মানুষের কল্যাণে আসে এমন সব আবিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করা যায়, তাহলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আমরা এগিয়ে যেতে পারি।

যেমন, রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে উন্নত ঔষধ, চিকিৎসা সামগ্রী, অপারেশন যন্ত্রপাতি, উন্নত খাদ্য ব্যবস্থা, উন্নত বাসস্থান, আরও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা।

সারাবিশ্বে উন্নত জাতের বৃক্ষ তরুলতা রোপণ। ময়লা আবর্জনা ক্ষতিকর গ্যাস নিধন করার উন্নত পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে।

পৃথিবীতে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, এমন সংস্কৃতি চলমান করতে, গবেষণা হোক।

যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যতবড় শক্তিশালী হোক, তাকে মরতে হবে, তাহলে শক্তির কি মূল্য থাকলো তখন।

তাই আমাদের উচিত, নিজে ভালভাবে বাঁচতে, সুস্থ্য থাকতে এবং সকল মানুষ জাতিকে ভালভাবে বাঁচাতে ও সুস্থ রাখতে কাজ করে যাওয়া।

আগামী প্রজন্মের কাছে, প্রশংসা ও মহান হয়ে বেঁচে থাকার অভিপ্রায় থাকলে, আমাদের সকল কাজ এবং গবেষণা হোক মানুষের কল্যাণের জন্য।

আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলা, বর্তমান সময়ের জ্ঞানী গুণী দার্শনিক কবি বিজ্ঞানীদের নৈতিক দায়িত্ব।

তাই আসুন, বিশ্বের শক্তিশালী এবং তুলনামূলক দূর্বল দল জাতি গোষ্ঠী রাষ্ট্র, সবাই একমত হই, যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই, আগ্রাসন নয়, ভালোবাসা এবং মেধা দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করি।

আরও পড়ুন

কুদরত রাহমান এর কবিতা /কাউকে ঠকাতে নেই

See more and read more

http://howsbd.wordpress.com

No Comments

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *