নারাজি নামা
– কুদরত রাহমান
কলিম চাচার বয়স হইছে,চুলে পাক ধরছে
শুন্য হাতের সংসার, স্বপ্ন ছিলো, স্বপ্ন আছে
গাধার মতো খাইটা পিইটা চলতে আছিলো
গৃহযুদ্ধে বাবা মা তার দুই দেশে দু’ জন।
শান্তি খুজতে গিয়া নিজেকে পুড়াইছে
নতুনগো জন্যে কিছু একটা করার অভিপ্রায়
প্রায় পঞ্চাশটি বছর পার কইরা, নদীর তটে
স্বাভাবিক মৃত্যুর অপেক্ষায়, দিন গণনা….
হয়, নতুনগের জন্যে যা গড়তে পারছে
তয়, খুব একটা কমকিছু কইলে ভুল হইবো
মানষে কয় কলিম ব্যাটা বুদ্ধিমান, মানবিক
নীতিবান, গরীবের পক্ষে হক কথা কয়
সংসারটা সাজাইছে, কজন তা পারছে বলো
কলিম চাচা প্রশংসা পাটায় বাইটা গায়ে মাখে
ওসবে তার ভ্রুক্ষেপ নাই, কর্তব্য করছে মাত্র
আর কদিন বাঁচবার কি খুব দরকার আছে?
হয় আছে, সুস্থ আর স্বাভাবিক মরনের ইচ্ছেয়
একলা চলা তার তীব্র কষ্ট, বয়স অবেলার কষ্ট
দু’দিন বাদে কেউ থাকবো না পাশে, হস্তান্তরে
খুউব বুঝতে পারছে, নেত্রকোণ জলে ভর করে।
ধরনীর অপর নাম বুঝি মায়ার জগৎ, ভাবায়
আশায়, ভরসায়, দশায়, দূর্দশায়, পরিণামে
আমারই যারা হৃদপিণ্ডের সূত্র ধরে ধরাধামে
তাগের সফলতা, সৌন্দর্যের বাগানটা দেখতাম।
সবাই সবকিছু ভুইলা গেছেরে, কলিমের আক্ষেপ
পিতার কোনো প্রাপ্তি নাই, দিছস, আরও দাও
নিজে মইরা হইলেও দাও, জন্ম দেয়াটার স্বার্থে
অদ্ভুত আচরণে, ভুতুড়ে বিচরণে, সময়ের কাঁটা।
মুচির পোলায়, ব্যারিস্টার হইলে জাত যায়না
ভদ্রলোকের পোলারা বড় সম্মানের হিসেবে টলে
কলিম চাচা, তবুও চলে, সুন্দর কথায় বলে
স্বাভাবিক মৃত্যুর অপেক্ষায়, সঙ্গী খুঁজে চলে।
হিসেবের পৃষ্ঠা হাজার বছরের তরে পোক্ত করে
শুধু নগদ দেখিস না, নক্ষত্রের দেশও তোগো তরে।।
নিজ বাসভবন। রাত:- ১:৩০। ০৯/০৭/২১ ইং।
আরও পড়ুন
কুদরত রাহমান এর কবিতা / ভালোবাসার সমাধি
আরও দেখুন এবং পড়ুন
No Comments