নকশী রুমাল
কুদরত রাহমান
সোনামুখো সুঁই, দাদু তুই এনে দিস এক মুতো
লাল নীল সব্জে রংয়ের রুমাল সেলাইয়ের সুতো,
দাদু হাসে সোহাগ মাখা স্বরে কয়, কার তরে
সোহাগী বলে কার তরে আবার, তোমার তরে,
ও আচ্ছা আচ্ছা তাহলে কি আর করা ..
পড়ন্ত বিকেলে, আলু মাছ পটলে ভরা
ধামাটা ধপাস্ করে পিড়েনে রেখে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে
মশকরা করে, হায় হায়, সুতার কথা গেছি ভুলে,
দাদু আর দাদী চোখে চোখ রেখে মুখচেপে হাসে
তারপর সব সদায়ের শেষে বেরিয়ে আসে
রঙিন সুতা, কাগজে গাঁথা চিকচিকে সুঁচ
সে এক খামটা দেয়া ভঙ্গিতে কেড়ে নিয়ে দেয় ছুট
খিড়কি আঁটে ঘরে, কি যে আনন্দ আহারে
রাতেই শুরু হয় রুমাল সেলাইয়ের কাজ বাহারে
থাকে লাজ, কখনও লুকায় সাঝ মিষ্ট হাবভাব
গাঁয়ের কিশোরী মাইয়ার এই ছিল সেদিনের স্বভাব
তারপর রুমালটি হারিয়ে যেতো,
যার তরে তৈয়ার সেইতো হাতে পেতো
যাকে সোহাগী সবচেয়ে ভালোবাসতো,
গাঁয়ের ভাবিদের চোখ কি এড়াতো
মিষ্টি প্রেমের উপহার নিয়ে কতনা কথা হতো
ফুল পাখি আর ছন্দ রুমালে সাজানো
কিযে যাদু থাকতো সেথা জড়ানো
সে স্থান এখন নানান গন্ধ মাখানো
টিসু পেপারের ওয়ান টাইম আঁটানো
ভালোবাসা বড় আধুনিক হয়েছে,
যে রুমাল প্রিয়ের কথা মনে পড়িয়েছে
তা এখন কালের হাওয়ায় হারিয়েছে
তাইকি, এতো বিচ্ছেদ ছড়িয়ে গেছে
টিসু পেপার ছেঁড়ার মতো, ছুঁড়ে ফেলার মত
প্রেমকেও ছুঁড়ে ফেলি যত্রতত্র
কালি মাখাই, গালি দেই, কত ব্যবধান
এই প্রেম আর সেই প্রেমের মাঝখানে
সোহাগীরা এখন বৃদ্ধা হয়েছে
এখনো প্রেম বাঁধিয়া রাখিছে,
অতীতকে মিলিয়ে দেখায় চোখের ভাষা
আফসোস করে,হায়রে প্রেম হায়রে ভালোবাসা।
আরও পড়ুন > কুদরত রাহমান এর কবিতা / পাল্টে যাবার জট
See more and read more
খুব ভালো লাগলো।
অসাধারণ
অনেক শুভ কামনা