কে বড়ো
– কুদরত রাহমান
অভাব অনটনে, ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে
নিমনিমে আলোয় পড়ুয়া ছেলেটিই
একদিন বিদ্যাসাগর হলো,
সমাজ সংসার সভ্যতার জন্যে
কতো হাজার পৃষ্ঠা পুস্তক লিখে গেলো,
গোলাম আলির নাকি সময়ই হলোনা
বাংলা শিক্ষকের প্রশ্নের জবাবে, তিনি বললেন
ক্লাসের পড়া শেষ করার সময়ই তো পাইনি স্যার
বিদ্যাসাগর পড়বো কখন, ও আচ্ছা
স্যারই মাথাটা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো
গাদাগাদা লেখাপড়া, মুখস্থ ঠুটস্থ নোটস্থ
আহা কি কষ্টের পড়ালেখা গো,
পন্ডিত মশাইয়ের প্রশ্নটা বড় সহজ ছিলো
লেখাপড়ায় তো ভালোই দেখছি, তা বাছাধন
লেখাপড়া করে কি হবে, ঠিক করেছো
ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার, চান্স না পেলে
অনার্স-মাস্টার্স করবো স্যার, সরকারি উচ্চপদে
চাকুরী একটা পেতেই হবে, অন্যথায় পণ্ডশ্রম
চাকুরী করবে কেনো?
ক্যান স্যার, চাকুরী মানেই টাকা, সম্মান গাড়ি বাড়ি
ও আচ্ছা, পন্ডিত মশাইয়ের প্রশ্ন দাঁড়িতে রূপান্তর
চোখেমুখে অখুশির ছায়া এসে মলিন করে দিলো
তুমুল লড়াইয়ের মাঝে আটকে গেলো সেদিন
প্রফেসর খিদির স্যার, হই চই চেঁচামেচি, হকিস্টিক
হতভম্ব হয়ে ভাবছিলো, এরাই সেইসব ছাত্রেরা বুঝি
যারা চাকুরী টাকা গাড়িবাড়ি অর্জনে পড়ুয়ার দল
কিসের প্রতিযোগিতায় মত্ত, কোন ক্ষমতার লক্ষে
উচ্চশিক্ষার এটা কি কোনো প্রাকটিকাল সাবজেক্ট
এই তোরা কি করিস, উত্তরে জোরালো কন্ঠ গর্জে
স্যার আপনি সরে যান, কোপাকুপি-গোলাগুলি হচ্ছে
শিষ্টাচার, ভদ্রতা, আহত হয়েছে, শিক্ষাগুরু বন্দী
যাহা শিখিলে, রাষ্ট্রকে তাহাইতো দিবে
সর্বত্র প্রতিযোগিতা ক্ষমতার দাপট চলমান দৃশ্য
শিক্ষাবঞ্চিত মায়ের আবাল পোলারা কাজের শেষে
টিভি পর্দায়, নাটক সিনেমা নয়, বাস্তব চিত্র দেখে
বিতর্ক আসর এখন চায়ের টেবিলে,বিষয় “কে বড়ো “
ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, পুলিশ, মন্ত্রী, না আমজনতা?
আরও পড়ুন
কুদরত রাহমান এর কবিতা /গভীর রাত্রি
আরও পড়ুন
অসাধারণ প্রকাশ
Thank you so much